Home বিশ্ব ঘুমধুমে মুক্তিযোদ্ধার বাড়ীতে মর্টারশেল, নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে সীমান্তঘেষা স্থানীয়রা।

ঘুমধুমে মুক্তিযোদ্ধার বাড়ীতে মর্টারশেল, নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে সীমান্তঘেষা স্থানীয়রা।

by Razon

লাগাতার গুলি ও বোমার শব্দে টানা তিনদিন তিন রাত ভয়-আতঙ্কে নির্ঘুম কেটেছে সীমান্ত বাসী, আবারো মর্টারশেল এসে পড়েছে ঘুমধুমে এক মুক্তিযোদ্ধার বাড়ীতে।

গত মঙ্গলবার(৬জানুয়ারী) সকাল সাড়ে নয়টায় ঘুমধুম এলাকার ঘুমধুম উচ্চবিদ্যালয়েন পিছনে মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের বাড়ীতে মর্টারশেল এসে পড়েছে। মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের ছেলে মনিরুল ইসলাম জানান সকাল সাড়ে নয়টার তাদের বাড়ীতে মিয়ানমার থেকে ছোড়া একটি মর্টারশেল এসে পড়ে বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হলে এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। লোকজন হতাহত না হলেও ঘরের জানালার গ্লাস ভেঙে যায় ও একটি গাছ ক্ষতিগ্রস্থ হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে বিজিবি”র সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মর্টারশেলের খন্ডিত অংশ সংগ্রহ করে নিয়ে যান। এরপর থেকে এলাকায় আতংক বিরাজ করছে। অন্যদিকে ঘুমধুমবাসী আরেকটি নির্ঘুম রাত পার করেছে। সীমান্তের ওপারে রাতভর গুলি আর বোমার আওয়াজে সীমান্ত এলাকাবাসী নির্ঘুম রাত পার করেছেন । প্রাণভয়ে নিরাপদ আশ্রয় খোঁজে ঘর ছেড়েছে সীমান্ত ঘেষা স্থানীয়রা।

ঘুমধুৃম ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের ইউনিয়নে ১,২ ও ৩নম্বর ওয়ার্ড এলাকার বাইশ পারি তঞ্চঙ্গ্যা পাড়া থেকে ২০ পরিবার,ভাজাবনিয়া তঞ্চঙ্গ্যা পাড়া থেকে ৩০ পরিবার, তুমব্রু কোনার পাড়া থেকে ৩০পরিবার, ঘুমধুম পূর্ব পাড়া থেকে ২০পরিবার, তুমব্রু হিন্দু পাড়া থেকে ১০ পরিবার নিরাপদ আশ্রয়ে পাশবর্তী কক্সবাজার উখিয়া, মরিচ্যা, কোট বাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকার আত্মীয় স্বজনের বাড়ীতে সোমবার বিকাল থেকেই আশ্রয় নিয়েছে।

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ.কে.এম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, আজকে টানা ৫-৬দিন ধরে সীমান্তে মায়ানমারের ওপারে গোলাগুলির কারণে আতঙ্কে আছে এলাকাবাসী। গত রাতব্যাপী সীমান্তের ওপারে গোলাগুলির আওয়াজ শোনা গেছে।

স্থনীয়দের বরাত দিয়ে চেয়ারম্যান আরো জানান, যতটুকু শুনেছি, ঘুমধুম ইউনিয়নের সম্মুখে মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষীবাহিনী ( বিজিপি)র ক্যাম্প ও ফাঁড়ি আরাকান আর্মিরা দখলে নেওয়ার পর এখন ঢেঁকিবুনিয়া বিজিপি ক্যাম্প দখলের যুদ্ধ চলছে। বাংলাদেশের সীমান্তঘেষা স্থানীয়রা নিরাপদ আশ্রয়ে খোঁজে বিভিন্ন এলাকার আত্মীয় স্বজনদের বাড়ীতে চলেগেছে। গোলাগুলি চলমান আছে। কখনো থেমে থেমে আবার কখনো লাগাতার আওয়াজ শুনা যাচ্ছে।

ঘুমধুম পুলিশফাঁড়ির ইনচার্জ (আইসি) মাহাফুজ ইমতিয়াজ ভুঁইয়া জানান সারারাত গোলাগুলির আওয়াজ শোনা গেছে। সকাল পৌনে দশটা পর্যন্ত বড় ধরনের কোন ক্ষতি হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। মিয়ানমার থেকে কেউ অনুপ্রবেশ করতে না পারে সে ব্যাপারে পুলিশ-বিজিবি কড়া সতর্ক পাহাড়ায় আছে এবং জেলা পুলিশের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী সীমান্তে বসবাসকারীদের স্থানীয় বাসিন্দাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করনে কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানান তিনি।

৩৪বিজিবি ও বিজিবি’র প্রধান কার্য্যলয় এর গণসংযোগ বিভাগের তথ্য মতে, গেল রবিরার(৪ফেব্রুয়ারী২০২৪) থেকে সীমান্তে ওপারে প্রতিবেশী মায়ানমারে স্বাধীনতাকামী বিদ্রোহী গ্রুপ আরাকান আর্মি’র বনাম জান্তা সরকার মধ্যকার সীমান্ত এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীদের ক্যাম্প, ফাঁড়ি দখলের চলমান লড়াইয়ে তুমুল যুদ্ধ চলছে। যুদ্ধে টিকতে না পেরে প্রাণ বাঁচাতে গত রবিবার (৪ফেব্রুয়ারী,২০২৪) ভোর রাত থেকে এই পর্যন্ত মোট ১১৪জন মায়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশের সদস্য(বিজিপি) বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) নিকট অস্ত্র সমর্পণ দিয়ে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এন্ড্রো ত্রিপুরা
বান্দরবান প্রতিনিধি।

You may also like

Leave a Comment